সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
Logo রাজশাহীতে আবারও ভবন ধ্বসের বীজ বপন Logo সিন্ডিকেটের বেড়া জালে পবা সাব রেজিস্ট্রি অফিস Logo রাজশাহীতে আবাসন ব্যবসায়ী”র বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ব্যবসায়ীক ও যুবলীগ নেতা Logo বিডিক্লিন রাজশাহীর উদ্যোগে ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo গোদাগাড়ী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ Logo সাংবাদিক মীর তোফায়েলের উপর হামলা, রাজশাহী বরেন্দ্র প্রেসক্লাবের নিন্দা Logo ১৩তম ডেপুটি জেলার এবং ৬১তম কারারক্ষি বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কোর্স সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত Logo কেশরহাটে অনুমোদনহীন সমিতির উচ্চ সুদে সর্বশান্ত অনেক পরিবার Logo রাজশাহীর লক্ষীপুরে ওয়ানওয়ে খুলে দেওয়ার দাবিতে মানববন্ধন Logo তিন দিনের বাংলাদেশ সফরে ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রধান

চিঠির বাক্সে লেখা ছিল নাম

রিপোর্টার: / ৩২৩ বার পড়া হয়েছে
আপডেট : শনিবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৩, ১২:০২ অপরাহ্ন
এখন আর চিঠির বাক্সে চিঠি থাকে না। ২০১৭ সালে কথাসাহিত্যিক শওকত আলীর বাড়ির চিঠির বাক্স। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু-ফারসি বিভাগের প্রয়াত চেয়ারম্যান কানিজ লিখেছিলেন, চল্লিশের দশক থেকে ষাটের দশকের মধ্যে অনেক বিত্তবান পরিবারের ছিল নিজস্ব রানার। যাঁরা ঘণ্টা বাজিয়ে বাজিয়ে চিঠি বিলি করতেন।

বংশালের আবুল হাসনাত রোডে ঢাকার সম্ভ্রান্ত অনেক পরিবারের সদস্যদের বসবাস আছে এখনো। তাঁদের বাড়িগুলো আগের আমলের ধাঁচেই রেখে দেওয়া হয়েছে। তবে চিঠির বাক্সগুলো আর নেই। এই পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের একজন সৈয়দ আহমাদ আলী। প্রথম আলোকে তিনি জানান, তাঁর বড় ফুফু ডক্টর কানিজ-ই-বাতুল নিজের দিনলিপিতে লিখে গেছেন সেই রানারদের কথা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু-ফারসি বিভাগের প্রয়াত চেয়ারম্যান কানিজ লিখেছিলেন, চল্লিশের দশক থেকে ষাটের দশকের মধ্যে অনেক বিত্তবান পরিবারের ছিল নিজস্ব রানার। যাঁরা ঘণ্টা বাজিয়ে বাজিয়ে চিঠি বিলি করতেন। হাতে থাকত বল্লমের মতো একটা লাঠি। তখন ওই এলাকার অনেক বাড়ির সদর দরজায় লাগানো ছিল কাঠের চিঠির বাক্স। রানার এবং বাক্স দুটোই গত হয়েছে অনেক দিন আগে।

ঔপন্যাসিক শওকত আলীর বিরতি ভিলার প্রবেশমুখে এখনো আছে সেই বাক্সটা। তাঁর পরিবারের সদস্য ফারজানা আফরোজ জানালেন, এখনো দু-একটা চিঠি আসে, তবে সেসব কোনো সংস্থা বা ব্যাংকের কাগজপত্র। এটি ব্যক্তির ঠিকানায় বলে তা-ও হয়তো দু-একটা চিঠি আসে। কিন্তু যেসব বাক্সের মালিক বদলায়, সেই বাক্সগুলো এখন থাকে অন্ধকারের ভেতর মাকড়সার জালে আটকানো।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আবাসিক ভবনগুলোর অধিকাংশে ছিল এই চিঠির বাক্স। পুরো ক্যাম্পাস ঘুরে দেখা গেল, দক্ষিণ ফুলার রোডের ৫৮ নম্বর ভবনের নিচতলা আর শহীদ মিনার কোয়ার্টারের অপরাজিতা, চন্দ্রমল্লিকা নামের দুই কোয়ার্টারের নিচতলায় আছে কয়েকটি কাঠের তৈরি পুরোনো চিঠির বাক্স। সেখানে শিশুদের সাইকেল, পুরোনো বইপত্রের ডাইয়ের ভেতর আটকে পড়েছে বাক্সগুলো। শহীদ মিনার কোয়ার্টার চত্বরের ভেতর প্রায় ৩০ বছর ধরে পাহারা দিচ্ছেন মো. আবদুল হাই। বললেন, একসময় রোজ এগুলো খুলে চিঠি সংগ্রহ করতে হতো। এখন কালেভদ্রে কেউ দু-একটা বিলের কাগজ রেখে যায়। ব্যবহার হয় না বলে আর দেখভালের ব্যাপার নেই। এসব বাক্সের প্রতিটির মুখে দেওয়া থাকত ছোট্ট একটা তালা। নিঃসন্দেহে সে তালার চাবিটি থাকত বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তির দখলে।

২০১৮ সালে মৃত্যুর বেশ কিছুদিন আগে থেকেই স্মৃতি এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল শওকত আলীর। চাবির কথা জিজ্ঞেস করায় বলেছিলেন, ‘হারিয়ে ফেলেছি। রয়ে যাওয়া বাক্সটিও এখন চেনা কঠিন। সম্প্রতি রংমিস্ত্রিরা ভুলে সাদা রং করে মুছে দিয়েছেন লিখে রাখা নামা দুটো। যেমন মুছে গেছে রানার এবং কাঠের তৈরি চিঠির বাক্সের গল্পের স্মৃতি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও খবর
Design & Developed by : Ecare Solutions